জসিম তালুকদার (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: সিআরবি সন্নিহিত এলাকাটি আমাদের গ্রীন হেরিটেজের অংশ, এখানে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ চলবে না বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। আজ শনিবার (১৭ জুলাই ২০২১ইং) বিকাল ৪টায় উত্তর কাট্টলীস্থ সুজনের বাসভবনে নাগরিক উদ্যোগের এক জরুরি নীতিনির্ধারণী সভায় তিনি এ হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
এসময় তিনি বলেন আমাদের চট্টগ্রামের জনগনের দাবী হচ্ছে পাবলিক হাসপাতাল। চট্টগ্রাম শহরে বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলো জায়গা জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন। যেগুলো বিভিন্ন গোষ্ঠী বছরের পর বছর অবৈধভাবে ভোগ দখল করে রেখেছে। এসব জায়গা অবৈধ দখলদারের কাছ থেকে উদ্ধার করে একটি পাবলিক হাসপাতার প্রতিষ্ঠা করা জনগনের দীর্ঘদিনের দাবী। নাগরিক উদ্যোগও দীর্ঘদিন ধরে বন্দর-পতেঙ্গা এলাকাসহ নগরীর যেকোন সুবিধাজনক স্থানে একটি পাবলিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছেন। প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর সুজন এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যসচিবের সাথে স্বাক্ষাত এবং উপআনুষ্ঠানিক পত্র প্রেরণের মাধ্যমে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য অনুরোধ জানান। পরবর্তীতে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে হাসপাতাল নির্মাণের জায়গা নির্ধারণ করে। ঐ জায়গাটি রেলওয়ের মালিকানাধীন হওয়ায় এখনো স্থানটির ছাড়পত্র দেয়নি রেলওয়ে। ঐ স্থানটিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জোর দাবী জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন চট্টগ্রামের মাষ্টারপ্ল্যানে সিআরবি এলাকাকে সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে সংরক্ষণ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে সেই বিধিনিষেধকে অমান্য করে সংরক্ষিত এলাকাটিকে বাণিজ্যিক হাসপাতাল নির্মাণের জন্য বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবুজ জায়গাকে সংরক্ষণ, নদী ও খাল উদ্ধারে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এ সরকার জনগনের সরকার, জনগনের অধিকার রক্ষার সরকার। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে কতিপয় অর্থলিপ্সু ব্যক্তি সরকারকে ভূল পথে পরিচালিত করতে চাইছে, এদের বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। একটি কুচক্রী বেনিয়া তাদের স্বার্থসিদ্ধি হাসিলের জন্য সরকার এবং জনগনের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টির অপচেষ্ঠায় লিপ্ত রয়েছে। তাদেরকে কনোভাবেই সফল হতে দেয়া যাবে না। যারা বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা এবং সিআরবি সন্নিহিত মাষ্টারপ্ল্যান এলাকার ভূমি নগর উন্নয়ন কমিটির ছাড়পত্র ছাড়া জায়গা বরাদ্দ দিয়েছেন তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানান তিনি। এছাড়া সিআরবির সবুজ প্রকৃতি ধ্বংসকারীদের রুখে দাড়াতে আগামী ১৯ জুলাই সোমবার বিকেল ৩টায় সিআরবি চত্বরে প্রতিবাদী জাগরণ যাত্রা ও নাগরিক সমাবেশ আয়োজনের ঘোষণা দেন। দল মত নির্বিশেষে চট্টগ্রামের সকল প্রকৃতিপ্রেমী নাগরিক সমাজকে ঐ জাগরণ যাত্রা ও নাগরিক সমাবেশে যথাসময়ে মাস্ক পরিধান করে উপস্থিত হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন এর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিবিদ আব্দুর রহমান মিয়া, রুহুল আমিন তপন, সাইদুর রহমান চৌধুরী, আলহাজ্ব মো. আজম খাঁন, নগর স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নুরুল কবির, মোরশেদ আলম, ডা. অঞ্জন কুমার দাশ, অধ্যক্ষ কামরুল হোসেন, শিশির কান্তি বল, ছালেহ আহমদ জঙ্গী, মোঃ শাহজাহান, সোলেমান সুমন, ফেরদৌস মাহমুদ আলমগীর, রেল শ্রমিকলীগ নেতা রকিবুল আলম সাজ্জী, সাবেক ছাত্রনেতা রাজীব হাসান রাজন, মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি এম ইমরান আহমেদ ইমু, মাহফুজ চৌধুরী, শ্রমিকনেতা মো. আলাউদ্দিন, ছাত্রনেতা মনিরুল হক মুন্না, এইচ এম জোবায়ের, হাসান চৌধুরী তানিম, রায়হান সাব্বির, দৈনিক প্রত্যয়ের জেলা প্রতিনিধি জসিম তালুকদার, আনন্দ আচার্য্য প্রমূখ।